সাতক্ষীরা জেলার অন্তর্গত, শ্যামনগর উপজেলাধীন, ৬ নং রমজাননগর ইউনিয়নের মধ্যস্থিত পৃথিবী বিখ্যাত সুন্দরবনের কোল ঘেষে কালিঞ্চী গ্রামে কালিঞ্চী এ, গফ্ফার মাধ্যমিক বিদ্যালয়টি অবস্থিত। মহান বিজয় দিবস উদযাপন ১৯৯৫ খ্রিষ্টাব্দ, অর্থাৎ ১৬/১২/১৯৯৫ খ্রিষ্টাব্দে এক অনাড়ম্বর অনুষ্ঠানে মাষ্টার আব্দুর রহমান সাহেব এর প্রস্তাবে জনাব মোঃ মোনাজাত আলী গাজী সাহেবের সভাপতিত্বে এক সভা অনুষ্ঠিত হয় । উক্ত সভায় জনাব খোদাবক্স (প্রধান শিক্ষক) প্রস্তাব করেন যে, অত্র বৃহৎ কালিঞ্চী, গোলাখালী, টেংরাখালী, ঠাকুরঘিরি, পূর্ব কৈখালী এলাকা জুড়ে কোন মাধ্যমিক বিদ্যালয় নাই। ফলে এই এলাকার বেশির ভাগ ছাত্র-ছাত্রী মাধ্যমিক শিক্ষা থেকে বঞ্চিত, তথা তাদের পড়া লেখা চিরতরে বন্ধ হয়ে যাচ্ছে। তাই অত্র কালিঞ্চী গ্রামে একটি মাধ্যমিক বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা করা হউক। তাহার এই প্রস্তাবের প্রেক্ষিতে অত্র এলাকার বিশিষ্ট সমাজসেবক ও শিক্ষানুরাগী ব্যক্তিত্ব জনাব আব্দুল গফ্ফার সাহেব বলেন যে, সরকারী নিয়ম নীতি পালন সাপেক্ষে আমি অত্র কালিঞ্চী এলাকায় একটি মাধ্যমিক বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা করার যাবতীয় ব্যবস্থা গ্রহন করিব। তাঁহার এই স্বতঃস্ফুর্ত ও আন্তরিকতাপূর্ন কথা শুনে উপস্থিত সকলে করতালির মাধ্যমে অভিনন্দন জানান এবং প্রতিষ্ঠানটি তৈরির ক্ষেত্রে একটি কার্যকরী কমিটি গঠন করেন। অতঃপর এই মহৎ উদ্যোগের কথা তৎকালীন সাংসদ জনাব এ, কে, ফজলুল হক সাহেবকে অবহিত করেন। তিনি তাঁহার সার্বিক সহযোগিতার মাধ্যমে অত্র প্রতিষ্ঠানটি গড়ার ক্ষেত্রে সর্বাধিক গুরুত্বপূর্ন ভূমিকা পালন করেন। তাছাড়া অত্র ৬ নং রমজান নগর ইউনিয়নের তৎকালীন চেয়ারম্যান জনাব শেখ আলমগীর হায়দার সাহেব প্রতিষ্ঠানটি গড়ার ক্ষেত্রে যথেষ্ট ভূমিকা পালন করেন। সাংসদ এ, কে, ফজলুল হক সাহেবের সভাপতিত্বে শিক্ষক কর্মচারী নিয়োগ দান করা হয়। প্রতিষ্ঠানের প্রতিষ্ঠাতা প্রধান শিক্ষক হিসাবে জনাব মোঃ এশার আলী সাহেবকে নিয়োগ দান করতঃ প্রতিষ্ঠান তৈরীর যাবতীয় কাগজপত্রাদি প্রস্তুতের জন্য পরামর্শ প্রদান করেন। প্রধান শিক্ষক সে মোতাবেক কাগজপত্রাদি প্রস্তুত ও যথাযথ কর্তৃপক্ষ সমীপে আবেদন নিবেদন সাপেক্ষে সকলের সহযোগিতায় প্রতিষ্ঠানটি গড়ার ক্ষেত্রে অগ্রনী ভূমিকা পালন করেন। প্রতিষ্ঠানটি স্থাপিত হয়ে বর্তমান পর্যায়ে উপনীত হয়েছে। সুফল হিসাবে অত্র এলাকাসমুহ হইতে ছাত্র-ছাত্রীরা এস, এস, সি পাশ করার পরে বিভিন্ন কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়া লেখা করার সুযোগ পাচ্ছে। এলাকার মানুষ শিক্ষিত হচ্ছে এবং দেশ গড়ার ক্ষেত্রে যথেষ্ট ভূমিকা পালন করছে। বিদ্যালয়টি ১২ কক্ষ বিশিষ্ট ৫তলা ভবন নির্মিত। বিদ্যালয়টিতে ১টি গভীর নলকূপ এবং শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের ব্যবহারের জন্য ২৫টি টয়লেট আছে। বিদ্যালয়ের পাশদিয়ে ১টি ত্রিমুখী রাস্তা বয়ে গেছে। বিদ্যালয়ে ছাত্র-ছাত্রীদের সহ-শিক্ষাক্রমিক কার্যক্রমের অংশ হিসাবে খেলা ধুলার জন্য ১টি খেলার মাঠ আছে। বিদ্যালয়টি কালিঞ্চী মৌজায় ৬ ও ৭ নং খতিয়ানে, ১৭৪, ১৭৫, ১৭৬, ৩০ ও ৩৪ দাগের অর্ন্তভুক্ত। বিদ্যালয় প্রাঙ্গণ ও ভবন সহ জমির পরিমান ১.০৪ একর।
